এ যেন বাঙালি হয়ে ওঠার, একত্র হয়ে ওঠার এক অনুভব। ভালোবাসা, সৌহার্দ্য আর আনন্দের এক অপূর্ব বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে নতুন বছরের প্রথম প্রহরে মানুষ আসেন রমনার বটমূলে ছায়ানটের ৫৮তম আয়োজনে। নতুন বছরকে গানে গানে বরণ করে নেয়ার যেন এক সার্থক আয়োজন। তবে সেই আয়োজনের পরতে পরতে সদ্যপ্রয়াত ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সনজীদা খাতুনকে মনে করেছেন তার সহযাত্রী ও শিষ্যরা।
ঈশানের পুঞ্জমেঘ যখন অন্ধ বেগে, বাধা বন্ধন হারা, প্রাণ ভরা ঝড়ের মতন, ধুলোমাখা হাওয়ায় পুব আকাশে তখন উঁকি দিলো রক্তিম আভায় উদ্ভাসিত এক সূর্য। জানান দিলো এই তো শুরু নববর্ষের।
বাংলা পঞ্জিকায় নতুন বছর ১৪৩২ এর পয়লা দিনে ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে রমনার বটমূলের ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী আয়োজনে যোগ দিতে আসতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ। কানায় কানায় পূর্ণ হয় বটমূল। দেড় শতাধিক শিল্পীর কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে অতীতের সকল আবর্জনা ভুলে নির্ভয়ে এগিয়ে যাওয়ার সম্মেলক গান।
৫৮তম এই আয়োজনে এবারের বার্তা ছিল ‘আমার মুক্তি আলোয়, আলোয়’। ভৈরবীতে রাগালাপ দিয়ে শুরু হওয়া আয়োজনে এবার ছিল ২৭টি পরিবেশনা। গোটা অনুষ্ঠান সাজানো হয় নতুন স্নিগ্ধ আলো, প্রকৃতি, এবং মানুষকে ভালোবাসার গান, দেশপ্রেম-মানবপ্রেম আর আত্মবোধন জাগরণের সুরবানী দিয়ে। থাকে বাঙালি সমাজকে নিয়ে আলোর পথে মুক্তির পথযাত্রী হওয়ার আহ্বান।
ছায়ানটের এবারের পরিবেশনায় ছিল ১২টি একক গান, নয়টি সম্মিলিত গান এবং নির্বাহী সভাপতির কথন। এছাড়াও গাজায় ফিলিস্তিনিদের হত্যার প্রতিবাদ ও শহীদদের স্মরণে করা হয় এক মিনিট নিরবতা পালন।
সবশেষে বরাবরের মতোই জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় এ বছরের পরিবেশনা।